এবারের মতো করো শেষ প্রাণে যদি পেয়ে থাকো চরমের পরম উদ্দেশ; যদি অবসান সুমধুর আপন বীণার তারে সকল বেসুর সুরে বেঁধে তুলে থাকে; অস্তরবি যদি তোরে ডাকে দিনেরে মাভৈঃ বলে যেমন সে ডেকে নিয়ে যায় অন্ধকার অজানায়; সুন্দরের শেষ অর্চনায় আপনার রশ্মিচ্ছটা সম্পূর্ণ করিয়া দেয় সারা; যদি সন্ধ্যাতারা অসীমের বাতায়নতলে শান্তির প্রদীপশিখা দেখায় কেমন করে জ্বলে; যদি রাত্রি তার খুলে দেয় নীরবের দ্বার, নিয়ে যায় নিঃশব্দ সংকেতে ধীরে ধীরে সকল বাণীর শেষ সাগরসংগম-তীর্থ-তীরে; সেই শতদল হতে যদি গন্ধ পেয়ে থাকো তার মানসসরসে যাহা শেষ অর্ঘ্য, শেষ নমস্কার।
আদি অন্ত হারিয়ে ফেলে সাদা কালো আসন মেলে পড়ে আছে আকাশটা খোশ-খেয়ালি, আমরা যে সব রাশি রাশি মেঘের পুঞ্জ ভেসে আসি, আমার তারি খেয়াল, তারি হেঁয়ালি। মোদের কিছু ঠিক-ঠিকানা নাই, আমরা আসি, আমরা চলে যাই। ওই-যে সকল জ্যোতির মালা গ্রহতারা রবির ডালা জুড়ে আছে নিত্যকালের পসরা, ওদের হিসেব পাকা খাতায় আলোর লেখা কালো পাতায়, মোদের তরে আছে মাত্র খসড়া-- রঙ-বেরঙের কলম দিয়ে এঁকে যেমন খুশি মোছে আবার লেখে। আমরা কভু বিনা কাজে ডাক দিয়ে যাই মাঝে মাঝে, অকারণে মুচকে হাসি হামেশা। তাই বলে সব মিথ্যে নাকি। বৃষ্টি সে তো নয়কো ফাঁকি, বজ্রটা তো নিতান্ত নয় তামাশা। শুধু আমরা থাকি নে কেউ ভাই, হাওয়ায় আসি হাওয়ায় ভেসে যাই।