আজিকার অরণ্যসভারে অপবাদ দাও বারে বারে; বল যবে দৃঢ় কণ্ঠে অহংকৃত আপ্তবাক্যবৎ প্রকৃতির অভিপ্রায়, "নব ভবিষ্যৎ করিবে বিরল রসে শুষ্কতার গান'-- বনলক্ষ্মী করিবে না অভিমান। এ কথা সবাই জানে-- যে সংগীতরসপানে প্রভাতে প্রভাতে আনন্দে আলোকসভা মাতে সে যে হেয়, সে যে অশ্রদ্ধেয়, প্রমাণ করিতে তাহা আরো বহু দীর্ঘকাল যাবে এই এক ভাবে। বনের পাখিরা ততদিন সংশয়বিহীন চিরন্তন বসন্তের স্তবে আকাশ করিবে পূর্ণ আপনার আনন্দিত রবে।
আমার নয়ন তব নয়নের নিবিড় ছায়ায় মনের কথার কুসুমকোরক খোঁজে। সেথায় কখন্ অগম গোপন গহন মায়ায় পথ হারাইল ও-যে। আতুর দিঠিতে শুধায় সে নীরবেরে, নিভৃত বাণীর সন্ধান নাই যে রে; অজানার মাঝে অবুঝের মতো ফেরে অশ্রুধারায় ম'জে। আমার হৃদয়ে যে কথা লুকানো, তার আভাষণ ফেলে কভু ছায়া তোমার হৃদয়তলে? দুয়ারে এঁকেছি রক্ত রেখায় পদ্ম-আসন, সে তোমারে কিছু বলে? তব কুঞ্জের পথ দিয়ে যেতে যেতে বাতাসে বাতাসে ব্যথা দিই মোর পেতে, বাঁশি কী আশায় ভাষা দেয় আকাশেতে সে কি কেহ নাহি বোঝে।