১৭ (jedin choitonyo mor mukti)

যেদিন চৈতন্য মোর মুক্তি পেল লুপ্তিগুহা হতে

নিয়ে এল দুঃসহ বিস্ময়ঝড়ে দারুণ দুর্যোগে

কোন্‌ নরকাগ্নিগিরিগহ্বরের তটে; তপ্তধূমে

গর্জি উঠি ফুঁসিছে সে মানুষের তীব্র অপমান,

অমঙ্গলধ্বনি তার কম্পান্বিত করে ধরাতল,

কালিমা মাখায় বায়ুস্তরে। দেখিলাম একালের

আত্মঘাতী মূঢ় উন্মত্ততা, দেখিনু সর্বাঙ্গে তার

বিকৃতির কদর্য বিদ্রূপ। এক দিকে স্পর্ধিত ক্রূরতা,

মত্ততার নির্লজ্জ হুংকার, অন্য দিকে ভীরুতার

দ্বিধাগ্রস্ত চরণবিক্ষেপ, বক্ষে আলিঙ্গিয়া ধরি

কৃপণের সতর্ক সম্বল-- সন্ত্রস্ত প্রাণীর মতো

ক্ষণিক-গর্জন-অন্তে ক্ষীণস্বরে তখনি জানায়

নিরাপদ নীরব নম্রতা। রাষ্ট্রপতি যত আছে

প্রৌঢ় প্রতাপের, মন্ত্রসভাতলে আদেশ-নির্দেশ

রেখেছে নিষ্পিষ্ট করি রুদ্ধ ওষ্ঠ-অধরের চাপে

সংশয়ে সংকোচে। এ দিকে দানবপক্ষী ক্ষুব্ধ শূন্যে

উড়ে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে বৈতরণীনদীপার হতে

যন্ত্রপক্ষ হুংকারিয়া নরমাংসক্ষুধিত শকুনি,

আকাশেরে করিল অশুচি। মহাকালসিংহাসনে

সমাসীন বিচারক, শক্তি দাও, শক্তি দাও মোরে,

কণ্ঠে মোর আনো বজ্রবাণী, শিশুঘাতী নারীঘাতী

কুৎসিত বীভৎসা-'পরে ধিক্কার হানিতে পারি যেন

নিত্যকাল রবে যা স্পন্দিত লজ্জাতুর ঐতিহ্যের

হৃৎস্পন্দনে, রুদ্ধকণ্ঠ ভয়ার্ত এ শৃঙ্খলিত যুগ যবে

নিঃশব্দে প্রচ্ছন্ন হবে আপন চিতার ভস্মতলে।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

Rendition

Please Login first to submit a rendition. Click here for help.