ভেবেছিনু মনে যা হবার তারি শেষে যাত্রা আমার বুঝি থেমে গেছে এসে। নাই বুঝি পথ, নাই বুঝি আর কাজ, পাথেয় যা ছিল ফুরায়েছে বুঝি আজ, যেতে হবে সরে নীরব অন্তরালে জীর্ণ জীবনে ছিন্ন মলিন বেশে। কী নিরখি আজি, এ কী অফুরান লীলা, এ কী নবীনতা বহে অন্তঃশীলা। পুরাতন ভাষা মরে এল যবে মুখে, নবগান হয়ে গুমরি উঠিল বুকে, পুরাতন পথ শেষ হয়ে গেল যেথা সেথায় আমারে আনিলে নূতন দেশে।
সুন্দরী তুমি শুকতারা সুদূর শৈলশিখরান্তে, শর্বরী যবে হবে সারা দর্শন দিয়ো দিক্ভ্রান্তে। ধরা যেথা অম্বরে মেশে আমি আধো-জাগ্রত চন্দ্র, আঁধারের বক্ষের 'পরে আধেক আলোকরেখা রন্ধ্র। আমার আসন রাখে পেতে নিদ্রাগহন মহাশূন্য, তন্ত্রী বাজাই স্বপনেতে তন্দ্রা ঈষৎ করি ক্ষুণ্ন। মন্দ চরণে চলি পারে, যাত্রা হয়েছে মোর সাঙ্গ। সুর থেমে আসে বারে বারে, ক্লান্তিতে আমি অবশাঙ্গ। সুন্দরী ওগো শুকতারা, রাত্রি না যেতে এসো তূর্ণ। স্বপ্নে যে বাণী হল হারা জাগরণে করো তারে পূর্ণ। নিশীথের তল হতে তুলি লহো তারে প্রভাতের জন্য। আঁধারে নিজেরে ছিল ভুলি, আলোকে তাহারে করো ধন্য। যেখানে সুপ্তি হল লীনা, যেথা বিশ্বের মহামন্দ্র, অর্পিনু সেথা মোর বাণী আমি আধো-জাগ্রত চন্দ্র।