ওই তোমার ওই বাঁশিখানি শুধু ক্ষণেক-তরে দাও গো আমার করে। শরৎ-প্রভাত গেল ব'য়ে, দিন যে এল ক্লান্ত হয়ে, বাঁশি-বাজা সাঙ্গ যদি কর আলস-ভরে তবে তোমার বাঁশিখানি শুধু ক্ষণেক-তরে দাও গো আমার করে। আর কিছু নয়, আমি কেবল করব নিয়ে খেলা শুধু একটি বেলা। তুলে নেব কোলের 'পরে, অধরেতে রাখব ধরে, তারে নিয়ে যেমন খুশি যেথা-সেথায় ফেলা-- এমনি করে আপন মনে করব আমি খেলা শুধু একটি বেলা। তার পরে যেই সন্ধে হবে এনে ফুলের ডালা গেঁথে তুলব মালা। সাজাব তায় যূথীর হারে, গন্ধে ভরে দেব তারে, করব আমি আরতি তার নিয়ে দীপের থালা। সন্ধে হলে সাজাব তায় ভরে ফুলের ডালা গেঁথে যূথীর মালা। রাতে উঠবে আধেক শশী তারার মধ্যখানে, চাবে তোমার পানে। তখন আমি কাছে আসি ফিরিয়ে দেব তোমার বাঁশি, তুমি তখন বাজাবে সুর গভীর রাতের তানে-- রাতে যখন আধেক শশী তারার মধ্যখানে চাবে তোমার পানে।
এবার তোরা আমার যাবার বেলাতে সবাই জয়ধ্বনি কর্। ভোরের আকাশ রাঙা হল রে, আমার পথ হল সুন্দর। কী নিয়ে বা যাব সেথা ওগো তোরা ভাবিস নে তা, শূন্য হাতেই চলব, বহিয়ে আমার ব্যাকুল অন্তর। মালা পরে যাব মিলন-বেশে আমার পথিক-সজ্জা নয়। বাধা বিপদ আছে মাঝের দেশে, মনে রাখি নে সেই ভয়। যাত্রা যখন হবে সারা উঠবে জ্বলে সন্ধ্যাতারা, পুরবীতে করুণ বাঁশরি দ্বারে বাজবে মধুর স্বর।