দুঃস্বপন কোথা হতে এসে জীবনে বাধায় গণ্ডগোল। কেঁদে উঠে জেগে দেখি শেষে কিছু নাই আছে মার কোল। ভেবেছিনু আর-কেহ বুঝি, ভয়ে তাই প্রাণপণে যুঝি, তব হাসি দেখে আজ বুঝি তুমিই দিয়েছ মোরে দোল। এ জীবন সদা দেয় নাড়া লয়ে তার সুখ দুখ ভয়; কিছু যেন নাই গো সে ছাড়া, সেই যেন মোর সমুদয়। এ ঘোর কাটিয়া যাবে চোখে নিমেষেই প্রভাত-আলোকে, পরিপূর্ণ তোমার সম্মুখে থেমে যাবে সকল কল্লোল।
এসো এসো এই বুকে নিবাসে তোমার, যূথভ্রষ্ট বাণবিদ্ধ হরিণী আমার, এইখানে বিরাজিছে সেই চির হাসি, আঁধারিতে পারিবে না তাহা মেঘরাশি। এই হস্ত এ হৃদয় চিরকাল মতো তোমার, তোমারি কাজে রহিবে গো রত! কিসের সে চিরস্থায়ী ভালোবাসা তবে, গৌরবে কলঙ্কে যাহা সমান না রবে? জানি না, জানিতে আমি চাহি না, চাহি না, ও হৃদয়ে এক তিল দোষ আছে কিনা, ভালোবাসি তোমারেই এই শুধু জানি, তাই হলে হল, আর কিছু নাহি মানি। দেবতা সুখের দিনে বলেছ আমায়, বিপদে দেবতা সম রক্ষিব তোমায়, অগ্নিময় পথ দিয়া যাব তব সাথে, রক্ষিব, মরিব কিংবা তোমারি পশ্চাতে।
যেতে যেতে চায় না যেতে ফিরে ফিরে চায়, সবাই মিলে পথে চলা হল আমার দায়। দুয়ার ধরে দাঁড়িয়ে থাকে, দেয় না সাড়া হাজার ডাকে-- বাঁধন এদের সাধন-ধন, ছিঁড়তে যে ভয় পায়। আবেশভরে ধুলায় প'ড়ে কতই করে ছল, যখন বেলা যাবে চলে ফেলবে আঁখিজল। নাই ভরসা, নাই যে সাহস, চিত্ত অবশ, চরণ অলস-- লতার মতো জড়িয়ে ধরে আপন বেদনায়।