হে ভুবন আমি যতক্ষণ তোমারে না বেসেছিনু ভালো ততক্ষণ তব আলো খুঁজে খুঁজে পায় নাই তার সব ধন। ততক্ষণ নিখিল গগন হাতে নিয়ে দীপ তার শূন্যে শূন্যে ছিল পথ চেয়ে। মোর প্রেম এল গান গেয়ে; কী যে হল কানাকানি দিল সে তোমার গলে আপন গলার মালাখানি। মুগ্ধচক্ষে হেসে তোমারে সে গোপনে দিয়েছে কিছু যা তোমার গোপন হৃদয়ে তারার মালার মাঝে চিরদিন রবে গাঁথা হয়ে।
পরজন্ম সত্য হলে কী ঘটে মোর সেটা জানি-- আবার আমায় টানবে ঘরে বাংলাদেশের এ রাজধানী। গদ্য পদ্য লিখনু ফেঁদে, তারাই আমায় আনবে বেঁধে, অনেক লেখায় অনেক পাতক, সে মহাপাপ করবে মোচন-- আমায় হয়তো করতে হবে আমার লেখা সমালোচন। ততদিনে দৈবে যদি পক্ষপাতী পাঠক থাকে কর্ণ হবে রক্তবর্ণ এমনি কটু বলব তাকে। যে বইখানি পড়বে হাতে দগ্ধ করব পাতে পাতে, আমার ভাগ্যে হব আমি দ্বিতীয় এক ধূম্রলোচন-- আমায় হয়তো করতে হবে আমার লেখা সমালোচন। বলব,"এ-সব কী পুরাতন! আগাগোড়া ঠেকছে চুরি। মনে হচ্ছে, আমিও এমন লিখতে পারি ঝুড়ি ঝুড়ি।' আরো যে-সব লিখব কথা ভাবতে মনে বাজছে ব্যথা, পরজন্মের নিষ্ঠুরতায় এ জন্মে হয় অনুশোচন-- আমায় হয়তো করতে হবে আমার লেখা সমালোচন। তোমরা, যাঁদের বাক্য হয় না আমার পক্ষে মুখরোচক তোমরা যদি পুনর্জন্মে হও পুনর্বার সমালোচক-- আমি আমায় পাড়ব গালি, তোমরা তখন ভাববে খালি কলম ক'ষে ব'সে ব'সে প্রতিবাদের প্রতি বচন। আমায় হয়তো করতে হবে আমার লেখা সমালোচন। লিখব, ইনি কবিসভায় হংসমধ্যে বকো যথা! তুমি লিখবে, কোন্ পাষণ্ড বলে এমন মিথ্যা কথা! আমি তোমায় বলব--মূঢ়, তুমি আমায় বলবে--রূঢ়, তার পরে যা লেখালেখি হবে না সে রুচিরোচন। তুমি লিখবে কড়া জবাব, আমি কড়া সমালোচন।