ফুলদানি হতে একে একে আয়ুক্ষীণ গোলাপের পাপড়ি পড়িল ঝরে ঝরে। ফুলের জগতে মৃত্যুর বিকৃতি নাহি দেখি। শেষ ব্যঙ্গ নাহি হানে জীবনের পানে অসুন্দর। যে মাটির কাছে ঋণী আপনার ঘৃণা দিয়ে অশুচি করে না তারে ফুল, রূপে গন্ধে ফিরে দেয় ম্লান অবশেষ। বিদায়ের সকরুণ স্পর্শ আছে তাহে; নাইকো ভর্ৎসনা। জন্মদিনে মৃত্যুদিনে দোঁহে যবে করে মুখোমুখি দেখি যেন সে মিলনে পূর্বাচলে অস্তাচলে অবসন্ন দিবসের দৃষ্টিবিনিময়-- সমুজ্জ্বল গৌরবের প্রণত সুন্দর অবসান।
সে পরম পরিপূর্ণ প্রভাতের লাগি, হে ভারত, সর্বদুঃখে রহো তুমি জাগি সরলনির্মলচিত্ত-- সকল বন্ধনে আত্মারে স্বাধীন রাখি, পুষ্প ও চন্দনে আপনার অন্তরের মাহাত্ম্যমন্দির সজ্জিত সুগন্ধি করি, দুঃখনম্রশির তাঁর পদতলে নিত্য রাখিয়া নীরবে। তাঁ' হতে বঞ্চিত করে তোমারে এ ভবে এমন কেহই নাই-- সেই গর্বভরে সর্বভয়ে থাকো তুমি নির্ভয় অন্তরে তাঁর হস্ত হতে লয়ে অক্ষয় সম্মান। ধরায় হোক-না তব যত নিম্ন স্থান তাঁর পাদপীঠ করো সে আসন তব যাঁর পাদরেণুকণা এ নিখিল ভব।