তোরা কেউ পারবি নে গো, পারবি নে ফুল ফোটাতে। যতই বলিস, যতই করিস, যতই তারে তুলে ধরিস, ব্যগ্র হয়ে রজনীদিন আঘাত করিস বোঁটাতে-- তোরা কেউ পারবি নে গো, পারবি নে ফুল ফোটাতে। দৃষ্টি দিয়ে বারে বারে ম্লান করতে পারিস তারে, ছিঁড়তে পারিস দলগুলি তার, ধুলায় পারিস লোটাতে-- তোদের বিষম গণ্ডগোলে যদিই-বা সে মুখটি খোলে, ধরবে না রঙ, পারবে না তার গন্ধটুকু ছোটাতে। তোরা কেউ পারবি নে গো, পারবি নে ফুল ফোটাতে। যে পারে সে আপনি পারে, পারে সে ফুল ফোটাতে। সে শুধু চায় নয়ন মেলে দুটি চোখের কিরণ ফেলে, অমনি যেন পূর্ণপ্রাণের মন্ত্র লাগে বোঁটাতে। যে পারে সে আপনি পারে, পারে সে ফুল ফোটাতে। নিশ্বাসে তার নিমেষেতে ফুল যেন চায় উড়ে যেতে, পাতার পাখা মেলে দিয়ে হাওয়ায় থাকে লোটাতে। রঙ যে ফুটে ওঠে কত প্রাণের ব্যাকুলতার মতো, যেন কারে আনতে ডেকে গন্ধ থাকে ছোটাতে। যে পারে সে আপনি পারে, পারে সে ফুল ফোটাতে।
না গো, এই যে ধুলা আমার না এ, তোমার ধুলার ধরার 'পরে উড়িয়ে যাব সন্ধ্যাবায়ে। দিয়ে মাটি আগুন জ্বালি' রচলে দেহ পূজার থালি, শেষ আরতি সারা করে ভেঙে যাব তোমার পায়ে।
ফুল যা ছিল পূজার তরে, যেতে পথে ডালি হতে অনেক যে তার গেছে পড়ে। কত প্রদীপ এই থালাতে সাজিয়েছিলে আপন হাতে, কত যে তার নিবল হাওয়ায়-- পৌঁছোল না চরণ-ছায়ে।