জানি আমি মোর কাব্য ভালোবেসেছেন মোর বিধি, ফিরে যে পেলেন তিনি দ্বিগুণ আপন-দেওয়া নিধি। তাঁর বসন্তের ফুল বাতাসে কেমন বলে বাণী সে যে তিনি মোর গানে বারম্বার নিয়েছেন জানি। আমি শুনায়েছি তাঁরে শ্রাবণরাত্রির বৃষ্টিধারা কী অনাদি বিচ্ছেদের জাগায় বেদন সঙ্গীহারা। যেদিন পূর্ণিমা-রাতে পুষ্পিত শালের বনে বনে শরীরী ছায়ার মতো একা ফিরি আপনার মনে গুঞ্জরিয়া অসমাপ্ত সুর, শালের মঞ্জরী যত কী যেন শুনিতে চাহে ব্যগ্রতায় করি শির নত, ছায়াতে তিনিও সাথে ফেরেন নিঃশব্দ পদচারে বাঁশির উত্তর তাঁর আমার বাঁশিতে শুনিবারে। যেদিন প্রিয়ার কালো চক্ষুর সজল করুণায় রাত্রির প্রহর-মাঝে অন্ধকারে নিবিড় ঘনায় নিঃশব্দ বেদনা, তার দুটি হাতে মোর হাত রাখি স্তিমিত প্রদীপালোকে মুখে তার স্তব্ধ চেয়ে থাকি, তখন আঁধারে বসি আকাশের তারকার মাঝে অপেক্ষা করেন তিনি, শুনিতে কখন বীণা বাজে যে সুরে আপনি তিনি উন্মাদিনী অভিসারিণীরে ডাকিছেন সর্বহারা মিলনের প্রলয়তিমিরে।