এই তীর্থ-দেবতার ধরণীর মন্দির-প্রাঙ্গণে যে পূজার পুষ্পাঞ্জলি সাজাইনু সযত্ন চয়নে সায়াহ্নের শেষ আয়োজন; যে পূর্ণ প্রণামখানি মোর সারা জীবনের অন্তরের অনির্বাণ বাণী জ্বালায়ে রাখিয়া গেনু আরতির সন্ধ্যাদীপ-মুখে সে আমার নিবেদন তোমাদের সবার সম্মুখে হে মোর অতিথি যত। তোমরা এসেছ এ জীবনে কেহ প্রাতে, কেহ রাতে, বসন্তে, শ্রাবণ-বরিষনে; কারো হাতে বীণা ছিল, কেহ বা কম্পিত দীপশিখা এনেছিলে মোর ঘরে; দ্বার খুলে দুরন্ত ঝটিকা বার বার এনেছ প্রাঙ্গণে। যখন গিয়েছ চলে দেবতার পদচিহ্ন রেখে গেছ মোর গৃহতলে। আমার দেবতা নিল তোমাদের সকলের নাম; রহিল পূজায় মোর তোমাদের সবারে প্রণাম।
শুধু তোমার বাণী নয় গো হে বন্ধু, হে প্রিয়, মাঝে মাঝে প্রাণে তোমার পরশখানি দিয়ো। সারা পথের ক্লান্তি আমার সারা দিনের তৃষা কেমন করে মেটাব যে খুঁজে না পাই দিশা। এ আঁধার যে পূর্ণ তোমায় সেই কথা বলিয়ো। মাঝে মাঝে প্রাণে তোমার পরশখানি দিয়ো। হৃদয় আমার চায় যে দিতে, কেবল নিতে নয়, ব'য়ে ব'য়ে বেড়ায় সে তার যা-কিছু সঞ্চয়। হাতখানি ওই বাড়িয়ে আনো, দাও গো আমার হাতে, ধরব তারে, ভরব তারে, রাখব তারে সাথে-- একলা পথের চলা আমার করব রমণীয়। মাঝে মাঝে প্রাণে তোমার পরশখানি দিয়ো।