কী হবে বলো গো সখি ভালোবাসি অভাগারে যদি ভালোবেসে থাক ভুলে যাও একেবারে -- একদিন এ হৃদয় -- আছিল কুসুমময় চরাচর পূর্ণ ছিল সুখের অমৃতধারে সেদিন গিয়েছে সখি আর কিছু নাই ভেঙে পুড়ে সব যেন হয়ে গেছে ছাই হৃদয়-কবরে শুধু মৃত ঘটনার ...[র]য়েছে পড়ে স্মৃতি নাম যার।
রাজা করে রণযাত্রা, বাজে ভেরি, বাজে করতাল-- কম্পমান বসুন্ধরা। মন্ত্রী ফেলি ষড়যন্ত্রজাল রাজ্যে রাজ্যে বাধায় জটিল গ্রন্থি। বাণিজ্যের স্রোত ধরণী বেষ্টন করে জোয়ার-ভাঁটায়। পণ্যপোত ধায় সিন্ধুপারে-পারে। বীরকীর্তিস্তম্ভ হয় গাঁথা লক্ষ লক্ষ মানবকঙ্কালস্তূপে, ঊর্ধ্বে তুলি মাথা চূড়া তার স্বর্গ-পানে হানে অট্টহাস। পণ্ডিতেরা-- আক্রমণ করে বারম্বার পুঁথির-প্রাচীর-ঘেরা দুর্ভেদ্য বিদ্যার দুর্গ। খ্যাতি তার ধায় দেশে দেশে। হেথা গ্রামপ্রান্তে নদী বহি চলে প্রান্তরের শেষে ক্লান্ত স্রোতে। তরীখানি তুলি লয়ে নববধূটিরে চলে দূর পল্লী-পানে। সূর্য অস্ত যায়। তীরে তীরে স্তব্ধ মাঠ। দুরুদুরু বালিকার হিয়া। অন্ধকারে ধীরে ধীরে সন্ধ্যাতারা দেখা দেয় দিগন্তের ধারে।
তিন বছরের বিরহিণী জানলাখানি ধরে কোন্ অলক্ষ্য তারার পানে তাকাও অমন করে। অতীত কালের বোঝার তলায় আমরা চাপা থাকি, ভাবী কালের প্রদোষ-আলোয় মগ্ন তোমার আঁখি। তাই তোমার ওই কাঁদন-হাসির সবটা বুঝি না যে, স্বপন দেখে অনাগত তোমার প্রাণের মাঝে। কোন্ সাগরের তীর দেখেছ জানে না তো কেউ, হাসির আভায় নাচে সে কোন্ সুদূর অশ্রু-ঢেউ। সেখানে কোন্ রাজপুত্তুর চিরদিনের দেশে তোমার লাগি সাজতে গেছে প্রতিদিনের বেশে। সেখানে সে বাজায় বাঁশি রূপকথারই ছায়ে, সেই রাগিণীর তালে তোমার নাচন লাগে গায়ে। আপনি তুমি জানো না তো আছ কাহার আশায়, অনামারে ডাক দিয়েছ চোখের নীরব ভাষায়। হয়তো সে কোন্ সকালবেলা শিশির-ঝলা পথে জাগরণের কেতন তুলে আসবে সোনার রথে, কিম্বা পূর্ণ চাঁদের লগ্নে, বৃহস্পতির দশায়-- দুঃখ আমার, আর সে যে হোক, নয় সে দাদামশায়।