অকূল সাগর-মাঝে চলেছে ভাসিয়া জীবনতরণী। ধীরে লাগিছে আসিয়া তোমার বাতাস, বহি আনি কোন্ দূর পরিচিত তীর হতে কত সুমধুর পুষ্পগন্ধ, কত সুখস্মৃতি, কত ব্যথা, আশাহীন কত সাধ, ভাষাহীন কথা। সম্মুখেতে তোমারি নয়ন জেগে আছে আসন্ন আঁধার-মাঝে অস্তাচল-কাছে স্থির ধ্রুবতারাসম; সেই অনিমেষ আকর্ষণে চলেছি কোথায়, কোন্ দেশ কোন্ নিরুদ্দেশ-মাঝে! এমনি করিয়া চিহ্নহীন পথহীন অকূল ধরিয়া দূর হতে দূরে ভেসে যাব-- অবশেষে দাঁড়াইব দিবসের সর্বপ্রান্তদেশে এক মুহূর্তের তরে; সারাদিন ভেসে মেঘখণ্ড যথা, রজনীর তীরে এসে দাঁড়ায় থমকি। ওগো, বারেক তখন জীবনের খেলা রেখে করুণ নয়ন পাঠায়ো পশ্চিম-পানে, দাঁড়ায়ো একাকী ওই দূর তীরদেশে অনিমেষ আঁখি। মুহূর্তে আঁধার নামি দিবে সব ঢাকি বিদায়ের পথ; তোমার অজ্ঞাত দেশে আমি চলে যাব; তুমি ফিরে যেয়ো হেসে সংসারের খেলাঘরে, তোমার নবীন দিবালোকে। অবশেষে যবে একদিন-- বহুদিন পরে-- তোমার জগৎ-মাঝে সন্ধ্যা দেখা দিবে, দীর্ঘ জীবনের কাজে প্রমোদের কোলাহলে শ্রান্ত হবে প্রাণ, মিলায়ে আসিবে ধীরে স্বপন-সমান চিররৌদ্রদগ্ধ এই কঠিন সংসার, সেইদিন এইখানে আসিয়ো আবার; এই তটপ্রান্তে বসে শ্রান্ত দু'নয়ানে চেয়ে দেখো ওই অস্ত-অচলের পানে সন্ধ্যার তিমিরে, যেথা সাগরের কোলে আকাশ মিশায়ে গেছে। দেখিবে তা হলে আমার সে বিদায়ের শেষ চেয়ে-দেখা এইখানে রেখে গেছে জ্যোতির্ময় রেখা। সে অমর অশ্রুবিন্দু সন্ধ্যাতারকার বিষণ্ণ আকার ধরি উদিবে তোমার নিদ্রাতুর আঁখি-'পরে; সারা রাত্রি ধরে তোমার সে জনহীন বিশ্রাম-শিয়রে একাকী জাগিয়া রবে। হয়তো স্বপনে ধীরে ধীরে এনে দেবে তোমার স্মরণে জীবনের প্রভাতের দু-একটি কথা। এক ধারে সাগরের চিরচঞ্চলতা তুলিবে অস্ফুট ধ্বনি, রহস্য অপার; অন্য ধারে ঘুমাইবে সমস্ত সংসার।
আসিবে সে, আছি সেই আশাতে। শোন নি কি, দুজনাকে নাম ধরে ওই ডাকে নিশিদিন আকাশের ভাষাতে। সুর বুকে আসে ভাসি, পথ চেনাবার বাঁশি বাজে কোন্ ওপারের বাসাতে। ফুল ফোটে বনতলে ইশারায় মোরে বলে "আসিবে সে'; আছি সেই আশাতে। এল না তো, এখনো সে এলো না। আলো-আঁধারের ঘোরে যে ডাক শুনিনু ভোরে সে শুধু স্বপন, সে কি ছলনা? হায় বেড়ে যায় বেলা, কবে শুরু হবে খেলা, সাজায়ে বসিয়া আছি খেলনা-- কিছু ভালো কিছু ভাঙা, কিছু কালো কিছু রাঙা; যারে নিয়ে খেলা সে তো এল না। আসে নি তো এখনো সে আসে নি। ভেবেছিনু আসে যদি, পাড়ি দেব ভরা নদী-- বসে আছি, আজও তরী ভাসে নি। মিলায় সিঁদুর-আলো, গোধূলি সে হয় কালো, কোথা সে স্বপনবনবাসিনী? মালতীর মালাগাছি কোলে নিয়ে বসে আছি-- যারে দেব এখনো সে আসে নি। এসেছে সে, মন বলে, এসেছে। সুবাস-আভাসখানি মনে হয় যেন জানি রাতের বাতাসে আজ ভেসেছে। বুঝিয়াছি অনুভবে বনমর্মররবে সে তার গোপন হাসি হেসেছে। অদেখার পরশেতে আঁধার উঠেছে মেতে-- মন জানে এসেছে সে এসেছে।
I REMEMBER the day. The heavy shower of rain is slackening into fitful pauses, renewed gusts of wind startle it from a first lull. I take up my instrument. Idly I touch the strings, till, without my knowing, the music borrows the mad cadence of that storm. I see her figure as she steals from her work, stops at my door, and retreats with hesitating steps. She comes again, stands outside leaning against the wall, then slowly enters the room and sits down. With head bent, she plies her needle in silence; but soon stops her work, and looks out of the window through the rain at the blurred line of trees. Only this-one hour of a rainy noon filled with shadows and song and silence.