আবার আমার হাতে বীণা দাও তুলি, আবার আসুক ফিরে হারা গানগুলি। সহসা কঠিন শীতে মানসের জলে পদ্মবন মরে যায়, হংস দলে দলে সারি বেঁধে উড়ে যায় সুদূর দক্ষিণে জনহীন কাশফুল্ল নদীর পুলিনে; আবার বসন্তে তারা ফিরে আসে যথা বহি লয়ে আনন্দের কলমুখরতা-- তেমনি আমার যত উড়ে-যাওয়া গান আবার আসুক ফিরে, মৌন এ পরান ভরি উতরোলে; তারা শুনাক এবার সমুদ্রতীরের তান, অজ্ঞাত রাজার অগম্য রাজ্যের যত অপরূপ কথা, সীমাশূন্য নির্জনের অপূর্ব বারতা।
এ শুধু অলস মায়া, এ শুধু মেঘের খেলা, এ শুধু মনের সাধ বাতাসেতে বিসর্জন; এ শুধু আপন মনে মালা গেঁথে ছিঁড়ে ফেলা নিমেষের হাসিকান্না গান গেয়ে সমাপন। শ্যামল পল্লবপাতে রবিকরে সারাবেলা আপনার ছায়া লয়ে খেলা করে ফুলগুলি, এও সেই ছায়া-খেলা বসন্তের সমীরণে। কুহকের দেশে যেন সাধ ক'রে পথ ভুলি। হেথা হোথা ঘুরি ফিরি সারাদিন আনমনে। কারে যেন দেব ব'লে কোথা যেন ফুল তুলি, সন্ধ্যায় মলিন ফুল উড়ে যায় বনে বনে। এ খেলা খেলিবে হায় খেলার সাথি কে আছে? ভুলে ভুলে গান গাই--কে শোনে, কে নাই শোনে-- যদি কিছু মনে পড়ে, যদি কেহ আসে কাছে॥