আমারে তুমি অশেষ করেছ এমনি লীলা তব। ফুরায়ে ফেলে আবার ভরেছ জীবন নব নব। কত যে গিরি কত যে নদীতীরে বেড়ালে বহি ছোটো এ বাঁশিটিরে, কত যে তান বাজালে ফিরে ফিরে কাহারে তাহা কব। তোমারি ওই অমৃতপরশে আমার হিয়াখানি হারালো সীমা বিপুল হরষে উথলি' উঠে বাণী। আমার শুধু একটি মুঠি ভরি দিতেছ দান দিবসবিভাবরী, হল না সারা কত-না যুগ ধরি, কেবলি আমি লব।
তবু কি ছিল না তব সুখদুঃখ যত, আশা নৈরাশ্যের দ্বন্দ্ব আমাদেরি মতো, হে অমর কবি! ছিল না কি অনুক্ষণ রাজসভা-ষড়্চক্র, আঘাত গোপন? কখনো কি সহ নাই অপমানভার, অনাদর, অবিশ্বাস, অন্যায় বিচার, অভাব কঠোর ক্রূর--নিদ্রাহীন রাতি কখনো কি কাটে নাই বক্ষে শেল গাঁথি? তবু সে সবার ঊর্ধ্বে নির্লিপ্ত নির্মল ফুটিয়াছে কাব্য তব সৌন্দর্যকমল আনন্দের সূর্য-পানে; তার কোনো ঠাঁই দুঃখদৈন্যদুর্দিনের কোনো চিহ্ন নাই। জীবনমন্থনবিষ নিজে করি পান অমৃত যা উঠেছিল করে গেছ দান।