এ আমির আবরণ সহজে স্খলিত হয়ে যাক; চৈতন্যের শুভ্র জ্যোতি ভেদ করি কুহেলিকা সত্যের অমৃত রূপ করুক প্রকাশ। সর্বমানুষের মাঝে এক চিরমানবের আনন্দকিরণ চিত্তে মোর হোক বিকীরিত। সংসারের ক্ষুব্ধতার স্তব্ধ ঊর্ধ্বলোকে নিত্যের যে শান্তিরূপ তাই যেন দেখে যেতে পারি, জীবনের জটিল যা বহু নিরর্থক, মিথ্যার বাহন যাহা সমাজের কৃত্রিম মূল্যেই, তাই নিয়ে কাঙালের অশান্ত জনতা দূরে ঠেলে দিয়ে এ জন্মের সত্য অর্থ স্পষ্ট চোখে জেনে যাই যেন সীমা তার পেরোবার আগে।
তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি বিচিত্র ছলনাজালে, হে ছলনাময়ী। মিথ্যা বিশ্বাসের ফাঁদ পেতেছ নিপুণ হাতে সরল জীবনে। এই প্রবঞ্চনা দিয়ে মহত্ত্বেরে করেছ চিহ্নিত; তার তরে রাখ নি গোপন রাত্রি। তোমার জ্যোতিষ্ক তা'রে যে-পথ দেখায় সে যে তার অন্তরের পথ, সে যে চিরস্বচ্ছ, সহজ বিশ্বাসে সে যে করে তা'রে চিরসমুজ্জল। বাহিরে কুটিল হোক অন্তরে সে ঋজু, এই নিয়ে তাহার গৌরব। লোকে তা'রে বলে বিড়ম্বিত। সত্যেরে সে পায় আপন আলোকে ধৌত অন্তরে অন্তরে। কিছুতে পারে না তা'রে প্রবঞ্চিতে, শেষ পুরস্কার নিয়ে যায় সে যে আপন ভান্ডারে। অনায়াসে যে পেরেছে ছলনা সহিতে সে পায় তোমার হাতে শান্তির অক্ষয় অধিকার।