যত ঘণ্টা, যত মিনিট, সময় আছে যত শেষ যদি হয় চিরকালের মতো, তখন স্কুলে নেই বা গেলেম; কেউ যদি কয় মন্দ, আমি বলব, "দশটা বাজাই বন্ধ।" তাধিন তাধিন তাধিন। শুই নে বলে রাগিস যদি, আমি বলব তোরে, "রাত না হলে রাত হবে কী করে। নটা বাজাই থামল যখন, কেমন করে শুই। দেরি বলে নেই তো, মা, কিচ্ছুই।" তাধিন তাধিন তাধিন। যত জানিস রূপকথা, মা, সব যদি যাস বলে রাত হবে না, রাত যাবে না চলে; সময় যদি ফুরোয় তবে ফুরোয় না তো খেলা, ফুরোয় না তো গল্প বলার বেলা। তাধিন তাধিন তাধিন।
এমন দিনে তারে বলা যায়, এমন ঘনঘোর বরিষায়! এমন মেঘস্বরে বাদল-ঝরঝরে তপনহীন ঘন তমসায়। সে কথা শুনিবে না কেহ আর, নিভৃত নির্জন চারি ধার। দুজনে মুখোমুখি গভীর দুখে দুখী, আকাশে জল ঝরে অনিবার। জগতে কেহ যেন নাহি আর। সমাজ সংসার মিছে সব, মিছে এ জীবনের কলরব। কেবল আঁখি দিয়ে আঁখির সুধা পিয়ে হৃদয় দিয়ে হৃদি অনুভব। আঁধারে মিশে গেছে আর সব। বলিতে বাজিবে না নিজ কানে, চমক লাগিবে না নিজ প্রাণে। সে কথা আঁখিনীরে মিশিয়া যাবে ধীরে এ ভরা বাদলের মাঝখানে। সে কথা মিশে যাবে দুটি প্রাণে। তাহাতে এ জগতে ক্ষতি কার নামাতে পারি যদি মনোভার? শ্রাবণবরিষনে একদা গৃহকোণে দু কথা বলি যদি কাছে তার তাহাতে আসে যাবে কিবা কার? আছে তো তার পরে বারো মাস, উঠিবে কত কথা কত হাস। আসিবে কত লোক কত-না দুখশোক, সে কথা কোন্খানে পাবে নাশ। জগৎ চলে যাবে বারো মাস। ব্যাকুল বেগে আজি বহে বায়, বিজুলি থেকে থেকে চমকায়। যে কথা এ জীবনে রহিয়া গেল মনে সে কথা আজি যেন বলা যায় এমন ঘনঘোর বরিষায়।