যারে নিজে তুমি ভাসিয়েছিলে দুঃখধারার ভরা স্রোতে তারে ডাক দিলে আজ কোন্ খেয়ালে আবার তোমার ও পার হতে ॥ শ্রাবণ-রাতে বাদল-ধারে উদাস ক'রে কাঁদাও যারে আবার তারে ফিরিয়ে আনো ফুল-ফোটানো ফাগুন-রাতে ॥ এ পার হতে ও পার ক'রে বাটে বাটে ঘোরাও মোরে। কুড়িয়ে আনা, ছড়িয়ে ফেলা, এই কি তোমার একই খেলা-- লাগাও ধাঁধা বারে বারে এই আঁধারে এই আলোতে ॥
কে ডাকে! আমি কভু ফিরে নাহি চাই। কত ফুল ফুটে উঠে, কত ফুল যায় টুটে, আমি শুধু বহে চলে যাই। পরশ পুলক-রস ভরা রেখে যাই, নাহি দিই ধরা। উড়ে আসে ফুলবাস, লতাপাতা ফেলে শ্বাস, বনে বনে উঠে হা-হুতাশ, চকিতে শুনিতে শুধু পাই, চলে যাই। আমি কভু ফিরে নাহি চাই।
তোমার বীণায় গান ছিল আর আমার ডালায় ফুল ছিল গো। একই দখিন হাওয়ায় সে দিন দোঁহায় মোদের দুল দিল গো ॥ সে দিন সে তো জানে না কেউ আকাশ ভরে কিসের সে ঢেউ, তোমার সুরের তরী আমার রঙিন ফুলে কূল নিল গো ॥ সে দিন আমার মনে হল, তোমার গানের তাল ধ'রে আমার প্রাণে ফুল-ফোটানো রইবে চিরকাল ধ'রে। গান তবু তো গেল ভেসে, ফুল ফুরালো দিনের শেষে, ফাগুনবেলার মধুর খেলায় কোন্খানে হায় ভুল ছিল গো ॥