কেন চেয়ে আছ, গো মা, মুখপানে । এরা চাহে না তোমারে চাহে না যে, আপন মায়েরে নাহি জানে। এরা তোমায় কিছু দেবে না, দেবে না— মিথ্যা কহে শুধু কত কী ভাণে।। তুমি তো দিতেছ, মা, যা আছে তোমারি— স্বর্ণশস্য তব, জাহ্নবীবারি, জ্ঞান ধর্ম কত পুণ্যকাহিনী। এরা কী দেবে তোরে ! কিছু না, কিছু না। মিথ্যা কবে শুধু হীনপরানে।। মনের বেদনা রাখো, মা, মনে । নয়নবারি নিবারো নয়নে।। মুখ লুকাও, মা, ধুলিশয়নে— ভুলে থাকো যত হীন সন্তানে। শূন্য-পানে চেয়ে প্রহর গণি গণি দেখো কাটে কিনা দীর্ঘ রজনী। দুঃখ জানায়ে কী হবে, জননী, নির্মম চেতনাহীন পাষাণে ।।
সেই তো বসন্ত ফিরে এল, হৃদয়ের বসন্ত ফুরায় হায় রে। সব মরুময়, মলয়-অনিল এসে কেঁদে শেষে ফিরে চলে যায় হায় রে॥ কত শত ফুল ছিল হৃদয়ে, ঝরে গেল, আশালতা শুকালো-- পাখিগুলি দিকে দিকে চলে যায়। শুকানো পাতায় ঢাকা বসন্তের মৃতকায়, প্রাণ করে হায়-হায় হায় রে॥ ফুরাইল সকলই। প্রভাতের মৃদু হাসি, ফুলের রূপরাশি, ফিরিবে কি আর। কিবা জোছনা ফুটিত রে কিবা যামিনী-- সকলই হারালো, সকলই গেল রে চলিয়া, প্রাণ করে হায় হায় হায় রে॥