ওগো সখী, দেখি দেখি, মন কোথা আছে। কত কাতর হৃদয় ঘুরে ঘুরে, হেরো কারে যাচে। কী মধু কী সুধা কী সৌরভ, কী রূপ রেখেছ লুকায়ে-- কোন্ প্রভাতে, ও কোন্ রবির আলোকে দিবে খুলিয়ে কাহার কাছে॥ সে যদি না আসে এ জীবনে, এ কাননে পথ না পায়! যারা এসেছে তারা বসন্ত ফুরালে নিরাশপ্রাণে ফেরে পাছে॥
আবার শ্রাবণ হয়ে এলে ফিরে, মেঘ-আঁচলে নিলে ঘিরে॥ সূর্য হারায়, হারায় তারা আঁধারে পথ হয়-যে হারা, ঢেউ দিয়েছে নদীর নীরে॥ সকল আকাশ, সকল ধরা বর্ষণেরই-বাণী-ভরা। ঝরো ঝরো ধারায় মাতি বাজে আমার আঁধার রাতি, বাজে আমার শিরে শিরে॥
এ নতুন জন্ম, নতুন জন্ম, নতুন জন্ম আমার। সেদিন বাজল দুপুরের ঘণ্টা, ঝাঁ ঝাঁ করে রোদ্দুর, স্নান করাতেছিলেম কুয়োতলায় মা-মরা বাছুরটিকে। সামনে এসে দাঁড়ালেন বৌদ্ধ ভিক্ষু আমার-- বললেন, জল দাও। শিউরে উঠল দেহ আমার, চমকে উঠল প্রাণ। বল্ দেখি মা, সারা নগরে কি কোথাও নেই জল! কেন এলেন আমার কুয়োর ধারে, আমাকে দিলেন সহসা মানুষের তৃষ্ণা-মেটানো সম্মান।