নিশীথরাতের প্রাণ কোন্ সুধা যে চাঁদের আলোয় আজ করেছে পান॥ মনের সুখে তাই আজ গোপন কিছু নাই, আঁধার ঢাকা ভেঙে ফেলে সব করেছে দান॥ দখিন-হাওয়ায় তার সব খুলেছে দ্বার। তারি নিমন্ত্রণে আজি ফিরি বনে বনে, সঙ্গে করে এনেছি এই রাত-জাগা মোর গান॥
যে দিন ফুটল কমল কিছুই জানি নাই আমি ছিলেম অন্যমনে। আমার সাজিয়ে সাজি তারে আনি নাই সে যে রইল সংগোপনে। মাঝে মাঝে হিয়া আকুলপ্রায়, স্বপন দেখে চমকে উঠে চায়, মন্দ মধুর গন্ধ আসে হায় কোথায় দখিন-সমীরণে। ওগো সেই সুগন্ধে ফিরায় উদাসিয়া আমায় দেশে দেশান্তে। যেন সন্ধানে তার উঠে নিশ্বাসিয়া ভুবন নবীন বসন্তে। কে জানিত দূরে তো নেই সে, আমারি গো আমারি সেই যে, এ মাধুরী ফুটেছে হায় রে আমার হৃদয়-উপবনে।
আমার মুখের কথা তোমার নাম দিয়ে দাও ধুয়ে, আমার নীরবতায় তোমার নামটি রাখো থুয়ে। রক্তধারার ছন্দে আমার দেহবীণার তার বাজাক আনন্দে তোমার নামেরই ঝঙ্কার। ঘুমের 'পরে জেগে থাকুক নামের তারা তব, জাগরণের ভালে আঁকুক অরুণলেখা নব। সব আকাঙক্ষা আশায় তোমার নামটি জ্বলুক শিখা, সকল ভালোবাসায় তোমার নামটি রহুক লিখা। সকল কাজের শেষে তোমার নামটি উঠুক ফ'লে, রাখব কেঁদে হেসে তোমার নামটি বুকে কোলে। জীবনপদ্মে সঙ্গোপনে রবে নামের মধু, তোমায় দিব মরণ-ক্ষণে তোমারি নাম বঁধু ॥