কাহার গলায় পরাবি গানের রতনহার, তাই কি বীণায় লাগালি যতনে নূতন তার ॥ কানন পরেছে শ্যামল দুকূল, আমের শাখাতে নূতন মুকুল, নবীনের মায়া করিল আকুল হিয়া তোমার ॥ যে কথা তোমার কোনো দিন আর হয় নি বলা নাহি জানি কারে তাই বলিবারে করে উতলা! দখিনপবনে বিহ্বলা ধরা কাকলিকূজনে হয়েছে মুখরা, আজি নিখিলের বাণীমন্দিরে খুলেছে দ্বার ॥
দূর রজনীর স্বপন লাগে আজ নূতনের হাসিতে, দূর ফাগুনের বেদন জাগে আজ ফাগুনের বাঁশিতে॥ হায় রে সে কাল হায় রে কখন চলে যায় রে আজ এ কালের মরীচিকায় নতুন মায়ায় ভাসিতে॥ যে মহাকাল দিন ফুরালে আমার কুসুম ঝরালো সেই তোমারি তরুণ ভালে ফুলের মালা পরালো। শুনিয়ে শেষের কথা সে কাঁদিয়ে ছিল হতাশে, তোমার মাঝে নতুন সাজে শূন্য আবার ভরালো। আমরা খেলা খেলেছিলেম, আমরাও গান গেয়েছি। আমরাও পাল মেলেছিলেম, আমরা তরী বেয়েছি। হারায় নি তা হারায় নি বৈতরণী পারায় নি-- নবীন চোখের চপল আলোয় সে কাল ফিরে পেয়েছি।
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে। একলা চলো, একলা চলো, একলা চলো, একলা চলো রে ॥ যদি কেউ কথা না কয়, ওরে ওরে ও অভাগা, যদি সবাই থাকে মুখ ফিরায়ে সবাই করে ভয়-- তবে পরান খুলে ও তুই মুখ ফুটে তোর মনের কথা একলা বলো রে ॥ যদি সবাই ফিরে যায়, ওরে ওরে ও অভাগা, যদি গহন পথে যাবার কালে কেউ ফিরে না চায়-- তবে পথের কাঁটা ও তুই রক্তমাখা চরণতলে একলা দলো রে ॥ যদি আলো না ধরে, ওরে ওরে ও অভাগা, যদি ঝড়-বাদলে আঁধার রাতে দুয়ার দেয় ঘরে-- তবে বজ্রানলে আপন বুকের পাঁজর জ্বালিয়ে নিয়ে একলা জ্বলো রে ॥