দাও-না ছুটি, কেমন করে বুঝিয়ে বলি কোন্খানে। যেখানে ওই শিরীষবনের গন্ধপথে মৌমাছিদের কাঁপছে ডানা সারাবেলা। যেখানেতে মেঘ-ভাসা ওই সুদূরতা, জলের প্রলাপ যেখানে প্রাণ উদাস করে সন্ধ্যাতারা ওঠার মুখে, যেখানে সব প্রশ্ন গেছে থেমে-- শূন্য ঘরে অতীত স্মৃতি গুন্গুনিয়ে ঘুম ভাঙিয়ে রাখে না আর বাদলরাতে। যেখানে এই মন গোরুচরা মাঠের মধ্যে স্তব্ধ বটের মতো গাঁয়ে-চলা পথের পাশে। কেউ বা এসে প্রহরখানেক বসে তলায়, পা ছড়িয়ে কেউ বা বাজায় বাঁশি, নববধূর পাল্কিখানা নামিয়ে রাখে ক্লান্ত দুই পহরে; কৃষ্ণ-একাদশীর রাতে ছায়ার সঙ্গে ঝিল্লিরবে জড়িয়ে পড়ে চাঁদের শীর্ণ আলো। যাওয়া-আসার স্রোত বহে যায় দিনে রাতে-- ধরে-রাখার নাই কোনো আগ্রহ, দূরে রাখার নাই তো অভিমান। রাতের তারা স্বপ্নপ্রদীপখানি ভোরের আলোয় ভাসিয়ে দিয়ে যায় চলে, তার দেয় না ঠিকানা।