গর্ব করে নিই নে ও নাম, জান অন্তর্যামী, আমার মুখে তোমার নাম কি সাজে। যখন সবাই উপহাসে তখন ভাবি আমি আমার কণ্ঠে তোমার নাম কি বাজে। তোমা হতে অনেক দূরে থাকি সে যেন মোর জানতে না রয় বাকি, নামগানের এই ছদ্মবেশে দিই পরিচয় পাছে মনে মনে মরি যে সেই লাজে। অহংকারের মিথ্যা হতে বাঁচাও দয়া করে রাখো আমায় যেথা আমার স্থান। আর-সকলের দৃষ্টি হতে সরিয়ে দিয়ে মোরে করো তোমার নত নয়ন দান। আমার পূজা দয়া পাবার তরে, মান যেন সে না পায় করো ঘরে, নিত্য তোমায় ডাকি আমি ধুলার 'পরে বসে নিত্যনূতন অপরাধের মাঝে।
সৃষ্টির চলেছে খেলা চারি দিক হতে শত ধারে কালের অসীম শূন্য পূর্ণ করিবারে। সম্মুখে যা কিছু ঢালে পিছনে তলায় বারে বারে; নিরন্তর লাভ আর ক্ষতি, তাহাতেই দেয় তারে গতি। কবির ছন্দের খেলা সেও থাকি থাকি নিশ্চিহ্ন কালের গায়ে ছবি আঁকা-আঁকি। কাল যায়, শূন্য থাকে বাকি। এই আঁকা-মোছা নিয়ে কাব্যের সচল মরীচিকা ছেড়ে দেয় স্থান, পরিবর্তমান জীবনযাত্রার করে চলমান টীকা। মানুষ আপন-আঁকা কালের সীমায় সান্ত্বনা রচনা করে অসীমের মিথ্যা মহিমায়, ভুলে যায় কত-না যুগের বাণীরূপ ভূমিগর্ভে বহিতেছে নিঃশব্দের নিষ্ঠুর বিদ্রূপ।