আজ পুরবে প্রথম নয়ন মেলিতে হেরিনু অরুণশিখা-- হেরিনু কমলবরন শিখা, তখনি হাসিয়া প্রভাততপন দিলেম আমারে টিকা-- আমার হৃদয়ে জ্যোতির টিকা। কে যেন আমার নয়ননিমেষে রাখিল পরশমণি, যে দিকে তাকাই সোনা করে দেয় দৃষ্টির পরশনি। অন্তর হতে বাহিরে সকলি আলোকে হইল মিশা, নয়ন আমার হৃদয় আমার কোথাও না পায় দিশা। আজ যেমনি নয়ন তুলিয়া চাহিনু কমলবরন শিখা-- আমার অন্তরে দিল টিকা। ভাবিয়াছি মনে দিব না মুছিতে এ পরশ-রেখা দিব না ঘুচিতে, সন্ধ্যার পানে নিয়ে যাব বহি নবপ্রভাতের লিখা-- উদয়রবির টিকা।
কেবল তব মুখের পানে চাহিয়া, বাহির হনু তিমির-রাতে তরণীখানি বাহিয়া। অরুণ আজি উঠেছে-- আশোক আজি ফুটেছে-- না যদি উঠে,না যদি ফুটে, তবুও আমি চলিব ছুটে তোমার মুখে চাহিয়া। নয়নপাতে ডেকেছ মোরে নীরবে। হৃদয় মোর নিমেষ-মাঝে উঠেছে ভরি গরবে। শঙ্খ তব বাজিল-- সোনার তরী সাজিল-- না যদি বাজে, না যদি সাজে, গরব যদি টুটে গো লাজে চলিব তবু নীরবে। কথাটি আমি শুধাব নাকো তোমারে। দাঁড়াব নাকো ক্ষণেক-তরে দ্বিধার ভরে দুয়ারে। বাতাসে পাল ফুলিছে-- পতাকা আজি দুলিছে-- না যদি ফুলে, না যদি দুলে, তরণী যদি না লাগে কূলে শুধাব নাকো তোমারে।