তখন নিশীথরাত্রি; গেলে ঘর হতে যে পথে চল নি কভু সে অজানা পথে। যাবার বেলায় কোনো বলিলে না কথা, লইয়া গেলে না কারো বিদায়বারতা। সুপ্তিমগ্ন বিশ্ব-মাঝে বাহিরিলে একা-- অন্ধকারে খুঁজিলাম, না পেলাম দেখা। মঙ্গলমুরতি সেই চিরপরিচিত অগণ্য তারার মাঝে কোথায় অন্তর্হিত! গেলে যদি একেবারে গেলে রিক্ত হাতে? এ ঘর হইতে কিছু নিলে না কি সাথে? বিশ বৎসরের তব সুখদুঃখভার ফেলে রেখে দিয়ে গেলে কোলেতে আমার! প্রতিদিবসের প্রেমে কতদিন ধরে যে ঘর বাঁধিলে তুমি সুমঙ্গল-করে পরিপূর্ণ করি তারে স্নেহের সঞ্চয়ে, আজ তুমি চলে গেলে কিছু নাহি লয়ে? তোমার সংসার-মাঝে, হায়, তোমা-হীন এখনো আসিবে কত সুদিন-দুর্দিন-- তখন এ শূন্য ঘরে চিরাভ্যাস-টানে তোমারে খুঁজিতে এসে চাব কার পানে? আজ শুধু এক প্রশ্ন মোর মনে জাগে-- হে কল্যাণী, গেলে যদি, গেলে মোর আগে, মোর লাগি কোথাও কি দুটি স্নিগ্ধ করে রাখিবে পাতিয়া শয্যা চিরসন্ধ্যা-তরে?
নাম তার ডাক্তার ময়জন। বাতাসে মেশায় কড়া পয়জন। গণিয়া দেখিল, বড়ো বহরের একখানা রীতিমতো শহরের টিঁকে আছে নাবালক নয়জন। খুশি হয়ে ভাবে, এই গবেষণা না জানি সবার কবে হবে শোনা, শুনিতে বা বাকি রবে কয়জন।
মনে করি এইখানে শেষ কোথা বা হয় শেষ আবার তোমার সভা থেকে আসে যে আদেশ। নূতন গানে নূতন রাগে নূতন করে হৃদয় জাগে, সুরের পথে কোথা যে যাই না পাই সে উদ্দেশ। সন্ধ্যাবেলার সোনার আভায় মিলিয়ে নিয়ে তান পূরবীতে শেষ করেছি যখন আমার গান-- নিশীথ রাতের গভীর সুরে আবার জীবন উঠে পুরে, তখন আমার নয়নে আর রয় না নিদ্রালেশ।