একদা এলোচুলে কোন্ ভুলে ভুলিয়া আসিল সে আমার ভাঙা দ্বার খুলিয়া। জ্যোৎস্না অনিমিখ, চারি দিক সুবিজন, চাহিল একবার আঁখি তার তুলিয়া। দখিনবায়ুভরে থরথরে কাঁপে বন, উঠিল প্রাণ মম তারি সম দুলিয়া। আবার ধীরে ধীরে গেল ফিরে আলসে, আমার সব হিয়া মাড়াইয়া গেল সে। আমার যাহা ছিল সব নিল আপনায়, হরিল আমাদের আকাশের আলো সে। সহসা এ জগৎ ছায়াবৎ হয়ে যায়, তাহারি চরণের শরণের লালসে। যে জন চলিয়াছে তারি পাছে সবে ধায়, নিখিলে যত প্রাণ যত গান ঘিরে তায়। সকল রূপহার উপহার চরণে, ধায় গো উদাসিয়া যত হিয়া পায় পায়। যে জন পড়ে থাকে একা ডাকে মরণে, সুদূর হতে হাসি আর বাঁশি শোনা যায়। শবদ নাহি আর, চারি ধার প্রাণহীন, কেবল ধুক্ ধুক্ করে বুক নিশিদিন। যেন গো ধ্বনি এই তারি সেই চরণের, কেবলি বাজে শুনি, তাই গুনি দুই তিন। কুড়ায়ে সব-শেষ অবশেষ স্মরণের বসিয়া একজন আনমন উদাসীন।
মহারাজা ভয়ে থাকে পুলিশের থানাতে, আইন বানায় যত পারে না তা মানাতে। চর ফিরে তাকে তাকে-- সাধু যদি ছাড়া থাকে খোঁজ পেলে নৃপতিরে হয় তাহা জানাতে, রক্ষা করিতে তারে রাখে জেলখানাতে।