হাসির কুসুম আনিল সে ডালি ভরি, আমি আনিলাম দুখবাদলের ফল। শুধালেম তারে, "যদি এ বদল করি হার হবে কার বল্।' হাসি কৌতুকে কহিল সে সুন্দরী, "এসো-না, বদল করি। দিয়ে মোর হার লব ফলভার অশ্রুর রসে ভরা।' চাহিয়া দেখিনু মুখপানে তার নিদয়া সে মনোহরা। সে লইল তুলে আমার ফলের ডালা, করতালি দিল হাসিয়া সকৌতুকে। আমি লইলাম তাহার ফুলের মালা, তুলিয়া ধরিনু বুকে। "মোর হল জয়' হেসে হেসে কয়, দূরে চলে গেল ত্বরা। উঠিল তপন মধ্যগগনদেশে, আসিল দারুণ খরা-- সন্ধ্যায় দেখি তপ্ত দিনের শেষে ফুলগুলি সব ঝরা।
এসো এসো এই বুকে নিবাসে তোমার, যূথভ্রষ্ট বাণবিদ্ধ হরিণী আমার, এইখানে বিরাজিছে সেই চির হাসি, আঁধারিতে পারিবে না তাহা মেঘরাশি। এই হস্ত এ হৃদয় চিরকাল মতো তোমার, তোমারি কাজে রহিবে গো রত! কিসের সে চিরস্থায়ী ভালোবাসা তবে, গৌরবে কলঙ্কে যাহা সমান না রবে? জানি না, জানিতে আমি চাহি না, চাহি না, ও হৃদয়ে এক তিল দোষ আছে কিনা, ভালোবাসি তোমারেই এই শুধু জানি, তাই হলে হল, আর কিছু নাহি মানি। দেবতা সুখের দিনে বলেছ আমায়, বিপদে দেবতা সম রক্ষিব তোমায়, অগ্নিময় পথ দিয়া যাব তব সাথে, রক্ষিব, মরিব কিংবা তোমারি পশ্চাতে।
তুমি এবার আমায় লহো হে নাথ,লহো। এবার তুমি ফিরো না হে-- হৃদয় কেড়ে নিয়ে রহো। যে দিন গেছে তোমা বিনা তারে আর ফিরে চাহি না, যাক সে ধুলাতে। এখন তোমার আলোয় জীবন মেলে যেন জাগি অহরহ। কী আবেশে কিসের কথায় ফিরেছি হে যথায় তথায় পথে প্রান্তরে, এবার বুকের কাছে ও মুখ রেখে তোমার আপন বাণী কহো। কত কলুষ কত ফাঁকি এখনো যে আছে বাকি মনের গোপনে, আমায় তার লাগি আর ফিরায়ো না, তারে আগুন দিয়ে দহো।