বিজন রাতে যদি রে তোর সাহস থাকে দিনশেষের দোসর যে জন মিলবে তাকে। ঘনায় যবে আঁধার ছেয়ে অভয় মনে থাকিস চেয়ে-- আসবে দ্বারে আলোর দূতী নীরব ডাকে। যখন ঘরে আসনখানি শূন্য হবে দূরের পথে পায়ের ধ্বনি শুনবি তবে। কাটল প্রহর যাদের আশায় তারা যখন ফিরবে বাসায়, সাহানাগান বাজবে তখন ভিড়ের ফাঁকে।
অনেক চাওয়া ফিরলি চেয়ে আশায় ভুলি, আজ যদি তোর শূন্য হল ভিক্ষা-ঝুলি চমক তবে লাগুক তোরে, অধরা ধন দিক সে ভরে গোপন বঁধু, দেখতে কভু পাস নি যাকে। অভিসারের পথ বেড়ে যায় চলিস যত-- পথের মাঝে মায়ার ছায়া অনেক-মতো। বসবি যবে ক্লান্তিভরে আঁচল পেতে ধুলার 'পরে, হঠাৎ পাশে আসবে সে যে পথের বাঁকে। এবার তবে করিস সারা কাঙাল-পনা-- সমস্তদিন কাণাকড়ির হিসাব-গণা। শান্ত হলে মিলবে চাবি, অন্তরেতে দেখতে পাবি সবার শেষে তার পরে যে অশেষ থাকে। দূর বাঁশিতে যে সুর বাজে তাহার সাথে মিলিয়ে নিয়ে বাজাস বাঁশি বিদায়-রাতে। সহজ মনে যাত্রাশেষে যাস রে চলে সহজ হেসে, দিস নে ধরা অবসাদের জটিল পাকে।
কুষ্মাণ্ডের মনে মনে বড়ো অভিমান বাঁশের মাচাটি তার পুষ্পক বিমান। ভুলেও মাটির পানে তাকায় না তাই, চন্দ্রসূর্যতারকারে করে ভাই ভাই। নভশ্চর ব'লে তার মনের বিশ্বাস, শূণ্যপানে চেয়ে তাই ছাড়ে সে নিশ্বাস। ভাবে শুধু মোটা এই বোঁটাখানা মোরে বেঁধেছে ধরার সাথে কুটুম্বিতা-ডোরে। বোঁটা যদি কাটা পড়ে তখনি পলকে উড়ে যাব আপনার জ্যোতির্ময় লোকে। বোঁটা যবে কাটা গেল, বুঝিল সে খাঁটি, সূর্য তার কেহ নয়, সবই তার মাটি।