এক যে ছিল রাজা সেদিন আমায় দিল সাজা। ভোরের রাতে উঠে আমি গিয়েছিলুম ছুটে, দেখতে ডালিম গাছে বনের পিরভু কেমন নাচে। ডালে ছিলেম চড়ে, সেটা ভেঙেই গেল পড়ে। সেদিন হল মানা আমার পেয়ারা পেড়ে আনা, রথ দেখতে যাওয়া, আমার চিঁড়ের পুলি খাওয়া। কে দিল সেই সাজা, জান কে ছিল সেই রাজা?
এক যে ছিল রানী আমি তার কথা সব মানি। সাজার খবর পেয়ে আমায় দেখল কেবল চেয়ে। বললে না তো কিছু, কেবল মুখটি করে নিচু আপন ঘরে গিয়ে সেদিন রইল আগল দিয়ে। হল না তার খাওয়া, কিংবা রথ দেখতে যাওয়া। নিল আমায় কোলে সাজার সময় সারা হলে। গলা ভাঙা-ভাঙা, তার চোখ-দুখানি রাঙা। কে ছিল সেই রানী আমি জানি জানি জানি।
বয়স বিংশতি হবে, শীর্ণ তনু তার বহু বরষের রোগে অস্থিচর্মসার। হেরি তার উদাসীন হাসিহীন মুখ মনে হয় সংসারে লেশমাত্র সুখ পারে না সে কোনোমতে করিতে শোষণ দিয়ে তার সর্বদেহ সর্বপ্রাণমন। স্বল্পপ্রাণ শীর্ণ দীর্ঘ জীর্ণ দেহভার শিশুসম কক্ষে বহি জননী তাহার আশাহীন দৃঢ়ধৈর্য মৌনম্লানমুখে প্রতিদিন লয়ে আসে পথের সম্মুখে। আসে যায় রেলগাড়ি, ধায় লোকজন-- সে চাঞ্চল্যে মুমূর্ষুর অনাসক্ত মন যদি কিছু ফিরে চায় জগতের পানে, এইটুকু আশা ধরি মা তাহারে আনে।