নিবিড়তিমির নিশা, অসীম কান্তার, লক্ষ দিকে লক্ষ জন হইতেছে পার। অন্ধকারে অভিসার, কোন্ পথপানে কার তরে, পান্থ তাহা আপনি না জানে। শুধু মনে হয় চিরজীবনের সুখ এখনি দিবেক দেখা লয়ে হাসিমুখ। কত স্পর্শ কত গন্ধ কত শব্দ গান কাছ দিয়ে চলে যায় শিহরিয়া প্রাণ। দৈবযোগে ঝলি উঠে বিদ্যুতের আলো, যারেই দেখিতে পাই তারে বাসি ভালো-- তাহারে ডাকিয়া বলি--ধন্য এ জীবন, তোমারি লাগিয়া মোর এতেক ভ্রমণ। অন্ধকারে আর সবে আসে যায় কাছে, জানিতে পারি নে তারা আছে কি না আছে।
এই আমি একমনে সঁপিলাম তাঁরে-- তোমরা তাঁহারি ধন আলোকে আঁধারে। যখনি আমারি ব'লে ভাবি তোমাদের মিথ্যা দিয়ে জাল বুনি ভাবনা-ফাঁদের। সারথি চালান যিনি জীবনের রথ তিনিই জানেন শুধু কার কোথা পথ। আমি ভাবি আমি বুঝি পথের প্রহরী, পথ দেখাইতে গিয়ে পথ রোধ করি। আমার প্রদীপখানি অতি ক্ষীণকায়া,-- যতটুকু আলো দেয় তার বেশি ছায়া। এ প্রদীপ আজ আমি ভেঙে দিনু ফেলে, তাঁর আলো তোমাদের নিক বাহু মেলে। সুখী হও দুঃখী হও তাহে চিন্তা নাই; তোমরা তাঁহারি হও, আশীর্বাদ তাই।