এ জীবনে সুন্দরের পেয়েছি মধুর আশীর্বাদ, মানুষের প্রীতিপাত্রে পাই তাঁরি সুধার আস্বাদ! দুঃসহ দুঃখের দিনে অক্ষত অপরাজিত আত্মারে লয়েছি আমি চিনে। আসন্ন মৃত্যুর ছায়া যেদিন করেছি অনুভব সেদিন ভয়ের হাতে হয় নি দুর্বল পরাভব। মহত্তম মানুষের স্পর্শ হতে হই নি বঞ্চিত, তাঁদের অমৃতবাণী অন্তরেতে করেছি সঞ্চিত। জীবনের বিধাতার যে দাক্ষিণ্য পেয়েছি জীবনে তাহারি স্মরণলিপি রাখিলাম সকৃতজ্ঞমনে।
অন্ধ মোহবন্ধ তব দাও মুক্ত করি-- রেখো না বসায়ে দ্বারে জাগ্রত প্রহরী হে জননী, আপনার স্নেহ-কারাগারে সন্তানেরে চিরজন্ম বন্দী রাখিবারে। বেষ্টন করিয়া তারে আগ্রহ-পরশে, জীর্ণ করি দিয়া তারে লালনের রসে, মনুষ্যত্ব-স্বাধীনতা করিয়া শোষণ আপন ক্ষুধিত চিত্ত করিবে পোষণ? দীর্ঘ গর্ভবাস হতে জন্ম দিলে যার স্নেহগর্ভে গ্রাসিয়া কি রাখিবে আবার? চলিবে সে এ সংসারে তব পিছু-পিছু? সে কি শুধু অংশ তব, আর নহে কিছু? নিজের সে, বিশ্বের সে, বিশ্বদেবতার-- সন্তান নহে, গো মাতঃ, সম্পত্তি তোমার।