আদি অন্ত হারিয়ে ফেলে সাদা কালো আসন মেলে পড়ে আছে আকাশটা খোশ-খেয়ালি, আমরা যে সব রাশি রাশি মেঘের পুঞ্জ ভেসে আসি, আমার তারি খেয়াল, তারি হেঁয়ালি। মোদের কিছু ঠিক-ঠিকানা নাই, আমরা আসি, আমরা চলে যাই। ওই-যে সকল জ্যোতির মালা গ্রহতারা রবির ডালা জুড়ে আছে নিত্যকালের পসরা, ওদের হিসেব পাকা খাতায় আলোর লেখা কালো পাতায়, মোদের তরে আছে মাত্র খসড়া-- রঙ-বেরঙের কলম দিয়ে এঁকে যেমন খুশি মোছে আবার লেখে। আমরা কভু বিনা কাজে ডাক দিয়ে যাই মাঝে মাঝে, অকারণে মুচকে হাসি হামেশা। তাই বলে সব মিথ্যে নাকি। বৃষ্টি সে তো নয়কো ফাঁকি, বজ্রটা তো নিতান্ত নয় তামাশা। শুধু আমরা থাকি নে কেউ ভাই, হাওয়ায় আসি হাওয়ায় ভেসে যাই।
চাহনি তাহার, সব কোলাহল হ'লে সারা সন্ধ্যার তিমিরে ভাসা তারা। মৌনখানি সুমধুর মিনতিরে লতায়ে লতায়ে যেন মনের চৌদিকে দেয় ঘিরে; নির্বাক চাহিয়া থাকে, নাহি পায় ভেবে কেমন করিয়া কী-যে দেবে। দুয়ার বাহিরে আসে ধীরে, ক্ষণেক নীরব থেকে চলে যায় ফিরে। নাও যদি কয় কথা মনে যেন ভরি দেয় সুস্নিগ্ধ মমতা। পায়ের চলায় কিছু যেন দান করে ধূলির তলায়। তারে কিছু করিলে জিজ্ঞাসা কিছু বলে, কিছু তবু বাকি থাকে ভাষা। নিঃশব্দে খুলিয়া দ্বার অঞ্চলে আড়াল করি সে যেন কাহার আনিয়াছে সৌভাগ্যের থালি-- নাম কি পিয়ালী।