মা কেহ কি আছ মোর, কাছে এসো তবে, পাশে বসে স্নেহ ক'রে জাগাও আমায়। স্বপ্নের সমাধিমাঝে বাঁচিয়া কী হবে, যুঝিতেছি জাগিবারে--আঁখি রুদ্ধ হায়। ডেকো না ডেকো না মোরে ক্ষুদ্রতার মাঝে, স্নেহময় আলস্যেতে রেখো না বাঁধিয়া, আশীর্বাদ করে মোরে পাঠাও গো কাজে-- পিছনে ডেকো না আর কাতরে কাঁদিয়া। মোর বলে কাহারেও দেব না কি বল, মোর প্রাণে পাবে না কি কেহ নব প্রাণ। করুণা কি শুধু ফেলে নয়নের জল, প্রেম কি ঘরের কোণে গাহে শুধু গান? তবেই ঘুচিবে মোর জীবনের লাজ যদি মা করিতে পারি কারো কোনো কাজ॥
এ লতার কোনো-একটা বিদেশী নাম নিশ্চয় আছে-- জানি নে, জানার দরকারও নেই। আমাদের দেশের মন্দিরে এই লতার ফুলের ব্যবহার চলে না, কিন্তু মন্দিরের বাহিরে যে দেবতা মুক্তস্বরূপে আছেন তাঁর প্রচুর প্রসন্নতা এর মধ্যে বিকশিত। কাব্যসরস্বতী কোনো মন্দিরের বন্দিনী দেবতা নন, তাঁর ব্যবহারে এই ফুলকে লাগাব ঠিক করেছি, তাই নতুন করে নাম দিতে হল। রূপে রসে এর মধ্যে বিদেশী কিছুই নেই, এদেশের হাওয়ায় মাটিতে এর একটুও বিতৃষ্ণা দেখা যায় না, তাই দিশী নামে একে আপন করে নিলেম। প্রত্যাশী হয়ে ছিনু এতকাল ধরি, বসন্তে আজ দুয়ারে, আ মরি মরি, ফুলমাধুরীর অঞ্জলি দিল ভরি মধুমঞ্জরিলতা। কতদিন আমি দেখিতে এসেছি প্রাতে কচি ডালগুলি ভরি নিয়ে কচি পাতে আপন ভাষায় যেন আলোকের সাথে কহিতে চেয়েছে কথা। কতদিন আমি দেখেছি গোধূলিকালে সোনালি ছায়ার পরশ লেগেছে ডালে, সন্ধ্যাবায়ুর মৃদু-কাঁপনের তালে কী যেন ছন্দ শোনে। গহন নিশীথে ঝিল্লি যখন ডাকে, দেখেছি চাহিয়া জড়িত ডালের ফাঁকে কালপুরুষের ইঙ্গিত যেন কাকে দূর দিগন্তকোণে। শ্রাবণে সঘন ধারা ঝরে ঝরঝর পাতায় পাতায় কেঁপে ওঠে থরথর, মনে হয় ওর হিয়া যেন ভরভর বিশ্বের বেদনাতে। কতবার ওর মর্মে গিয়েছি চলি, বুঝিতে পেরেছি কেন উঠে চঞ্চলি, শরৎশিশিরে যখন সে ঝলমলি শিহরায় পাতে পাতে। ভুবনে ভুবনে যে প্রাণ সীমানাহারা গগনে গগনে সিঞ্চিল গ্রহতারা পল্লবপুটে ধরি লয় তারি ধারা, মজ্জায় লহে ভরি। কী নিবিড় যোগ এই বাতাসের সনে, যেন সে পরশ পায় জননীর স্তনে, সে পুলকখানি কত-যে, সে মোর মনে বুঝিব কেমন করি। বাতাসে আকাশে আলোকের মাঝখানে-- ঋতুর হাতের মায়ামন্ত্রের টানে কী-যে বাণী আছে প্রাণে প্রাণে ওই জানে, মন তা জানিবে কিসে। যে ইন্দ্রজাল দ্যুলোকে ভূলোকে ছাওয়া, বুকের ভিতর লাগে ওর তারি হাওয়া-- বুঝিতে যে চাই কেমন সে ওর পাওয়া, চেয়ে থাকি অনিমেষে। ফুলের গুচ্ছে আজি ও উচ্ছ্বসিত, নিখিলবাণীর রসের পরশামৃত গোপনে গোপনে পেয়েছে অপরিমিত ধরিতে না পারে তারে। ছন্দে গন্ধে রূপ-আনন্দে ভরা, ধরণীর ধন গগণের মন-হরা, শ্যামলের বীণা বাজিল মধুস্বরা ঝংকারে ঝংকারে। আমার দুয়ারে এসেছিল নাম ভুলি পাতা-ঝলমল অঙ্কুরখানি তুলি মোর আঁখিপানে চেয়েছিল দুলি দুলি করুণ প্রশ্নরতা। তার পরে কবে দাঁড়াল যেদিন ভোরে ফুলে ফুলে তার পরিচয়লিপি ধরে নাম দিয়ে আমি নিলাম আপন ক'রে-- মধুমঞ্জরিলতা। তার পরে যবে চলে যাব অবশেষে সকল ঋতুর অতীত নীরব দেশে, তখনো জাগাবে বসন্ত ফিরে এসে ফুল-ফোটাবার ব্যথা। বরষে বরষে সেদিনও তো বারে বারে এমনি করিয়া শূন্য ঘরের দ্বারে এই লতা মোর আনিবে কুসুমভারে ফাগুনের আকুলতা। তব পানে মোর ছিল যে প্রাণের প্রীতি ওর কিশলয়ে রূপ নেবে সেই স্মৃতি, মধুর গন্ধে আভাসিবে নিতি নিতি সে মোর গোপন কথা। অনেক কাহিনী যাবে যে সেদিন ভূলে, স্মরণচিহ্ন কত যাবে উন্মূলে; মোর দেওয়া নাম লেখা থাক্ ওর ফুলে মধুমঞ্জরিলতা।
I SEEK AND SEEK on my harp strings the notes that can blend with thine. Simple is the awakening of the morning and the flow of water, simple are the dewdrops on leaves, colours in clouds, the moonlight on sand-banks of the river and showers of rain in the midnight. I seek notes for my songs simple and full as these, fresh and flowing with life, old as the world and known to all. But my strings are newly strung and they bristle with sharp newness as with spears. Thus my songs never have the spirit of the winds, they never can mingle with the lights of the sky. My effort is an effort and my restless strains try hard to drown thy music.