কীর্তনের সুর ভালোবেসে সখী, নিভৃতে যতনে আমার নামটি লিখিয়ো--তোমার মনের মন্দিরে। আমার পরানে যে গান বাজিছে তাহারি তালটি শিখিয়ো--তোমার চরণমঞ্জীরে। ধরিয়া রাখিয়ো সোহাগে আদরে আমার মুখর পাখিটি--তোমার প্রাসাদপ্রাঙ্গণে। মনে ক'রে সখী, বাঁধিয়া রাখিয়ো আমার হাতের রাখীটি--তোমার কনককঙ্কণে। আমার লতার একটি মুকুল ভুলিয়া তুলিয়া রাখিয়ো--তোমার অলকবন্ধনে। আমার স্মরণ-শুভ-সিন্দুরে একটি বিন্দু আঁকিয়ো--তোমার ললাটচন্দনে। আমার মনের মোহের মাধুরী মাখিয়া রাখিয়া দিয়ো গো--তোমার অঙ্গসৌরভে। আমার আকুল জীবনমরণ টুটিয়া লুটিয়া নিয়ো গো--তোমার অতুল গৌরবে।
না বুঝেও আমি বুঝেছি তোমারে কেমনে কিছু না জানি। অর্থের শেষ পাই না, তবুও বুঝেছি তোমার বাণী। নিশ্বাসে মোর নিমেষের পাতে চেতনা বেদনা ভাবনাআঘাতে কে দেয় সর্বশরীরে ও মনে তব সংবাদ আনি। না বুঝেও আমি বুঝেছি তোমারে কেমনে কিছু না জানি। তব রাজত্ব লোক হতে লোকে সে বারতা আমি পেয়েছি পলকে, হৃদি-মাঝে যবে হেরেছি তোমার বিশ্বের রাজধানী। না বুঝেও আমি বুঝেছি তোমারে কেমনে কিছু না জানি। আপনার চিতে নিবিড় নিভৃতে যেথায় তোমারে পেয়েছি জানিতে সেথায় সকলি স্থির নির্বাক্ ভাষা পরাস্ত মানি। না বুঝেও আমি বুঝেছি তোমারে কেমনে কিছু না জানি।