সেই ভালো, প্রতি যুগ আনে না আপন অবসান, সম্পূর্ণ করে না তার গান; অতৃপ্তির দীর্ঘশ্বাস রেখে দিয়ে যায় সে বাতাসে। তাই যবে পরযুগে বাঁশির উচ্ছ্বাসে বেজে ওঠে গানখানি তার মাঝে সুদূরের বাণী কোথায় লুকায়ে থাকে, কী বলে সে বুঝিতে কে পারে; যুগান্তরের ব্যথা প্রত্যহের ব্যথার মাঝারে মিলায় অশ্রুর বাষ্পজল; অতীতের সূর্যাস্তের কাল আপনার সকরুণ বর্ণচ্ছটা মেলে মৃত্যুর ঐশ্বর্য দেয় ঢেলে, নিমেষের বেদনারে করে সুবিপুল। তাই বসন্তের ফুল নাম-ভুলে-যাওয়া প্রেয়সীর নিশ্বাসের হাওয়া যুগান্তর-সাগরের দ্বীপান্তর হতে বহি আনে। যেন কী অজানা ভাষা মিশে যায় প্রণয়ীর কানে পরিচিত ভাষাটির সাথে, মিলনের রাতে।
গতি আমার এসে ঠেকে যেথায় শেষে অশেষ সেথা খোলে আপন দ্বার। যেথা আমার গান হয় গো অবসান সেথা গানের নীরব পারাবার। যেথা আমার আঁখি আঁধারে যায় ঢাকি অলখ-লোকের আলোক সেথা জ্বলে। বাইরে কুসুম ফুটে ধুলায় পড়ে টুটে, অন্তরে তো অমৃত-ফল ফলে। কর্ম বৃহৎ হয়ে চলে যখন বয়ে তখন সে পায় বৃহৎ অবকাশ। যখন আমার আমি ফুরায়ে যায় থামি তখন আমার তোমাতে প্রকাশ।